মাধ্যমিক ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
Dipendu Mondal
1. ব্রিটিশ সরকার কেন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে 'সোমপ্রকাশ' সাময়িক পত্রের প্রকাশ বন্ধ
করে দেয় ?
নীলকরদের অত্যাচারের প্রতিবাদ ও কাবুলে ব্রিটিশ নীতির সমালোচনা করেছিল
‘সোমপ্রকাশ’। ফলে ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্টের ভিত্তিতে সোমপ্রকাশের সম্পাদককে মুচলেকা
ও জরিমানা দিতে বলা হয়। সোমপ্রকাশের সম্পাদক মুচলেকা বা জরিমানা দিতে অস্বীকার
করায় ব্রিটিশ সরকার ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ‘সোমপ্রকাশ'-এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়।
2. নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝো?
উত্তর- জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-শ্রেণি নির্বিশেষে সমাজের তথাকথিত নিম্নবর্গের মানুষদের
নিয়ে যে ইতিহাসচর্চা বর্তমানে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, তা নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা
নামে পরিচিত। এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় তথাকথিত নিম্নবর্গের নাম না জানা মানুষরাই
ইতিহাসের যথার্থ নায়কে পরিণত হয়েছে। এই ধারার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বিখ্যাত
ঐতিহাসিক হলেন রণজিৎ গুহ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গৌতম ভদ্র প্রমুখ।
3. খেলাধূলা কীভাবে জাতীয়তাবাদের বিস্তারে সহায়ক হয় ?
উত্তর- নিছক বিনোদনের মাধ্যম হলেও জাতীয়তাবাদের জাগরণে খেলাধুলার ঐতিহাসিক
ভূমিকা উপেক্ষা করা যায় না। কুস্তি, লাঠিখেলা, শরীরচর্চাকে কেন্দ্র করে ঔপনিবেশিক
ভারতে যে আখড়া সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল, তার মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনার বীজ
সুপ্ত ছিল। আবার ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বাংলার মোহনবাগান দল শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশদের ফুটবল
যুদ্ধে পরাজিত করে যে আই. এফ. এ শিল্ড জয় করেছিল, তা একাধারে
বঙ্গভঙ্গের যোগ্য জবাব, অন্যদিকে বাঙালির জাতীয়তাবাদের দ্যোতক।
4. আধুনিক ইতিহাসচর্চায় সাধারণ মানুষের উপর বেশি জোর দেওয়া হয় কেন ?
উত্তর- আধুনিক ইতিহাসচর্চা সমগ্রতার সন্ধানী। সমাজে অস্তিত্ব আছে কিন্তু সাবেক
ইতিহাসে স্থান পায়নি—এমন সবকিছুই আধুনিক ইতিহাসের বিষয়বস্তু। স্বভাবতই সমাজের
সাধারণ মানুষ, তাদের কাজকর্ম, চিন্তা-ভাবনা, ধর্ম, পোশাক-পরিচ্ছদ, খেলাধুলা, খাদ্যাভ্যাস
প্রভৃতি সবকিছুই ইতিহাসচর্চার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
5. আধুনিক ইতিহাসচর্চায় পোশাক-পরিচ্ছদের গুরুত্ব কী?
উত্তর- মানুষের বহিরাঙ্গিক আবরণ বা তার পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে ইতিহাসচর্চার যে
উপাদানগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল—(ক) কোনো মানুষ বা জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক
অবস্থা, (খ) সামাজিক রুচিবোধ, (গ) সামাজিক উদারতার মাত্রা, (ঘ) লিঙ্গবৈষম্য প্রভৃতি।
6. ভারতে সংঘটিত দুটি পরিবেশ আন্দোলনের নাম লেখো।
উত্তর ভারতে সংঘটিত দুটি পরিবেশ আন্দোলন হল – (ক) ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরলাল
বহুগুণার নেতৃত্বে চিপকো আন্দোলন এবং (খ) ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে মেধা পাটেকরের নেতৃত্বে
নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন।
তথ্যসূত্র -সম্রাট সাজেশন