চাঁদ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
Dipendu Mondal
চাঁদ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেয়া হলো:
1. চাঁদের গঠন: চাঁদ মূলত পাথর এবং ধাতব পদার্থের মিশ্রণে গঠিত। এর ভেতরটা শক্ত মেটালিক কোর এবং বাইরের দিকে সিলিকেট ম্যান্টেল দিয়ে গঠিত। চাঁদের পৃষ্ঠতল বেশিরভাগই ক্রেটার, পাহাড় এবং সমভূমিতে আচ্ছাদিত।
2. আকার ও দূরত্ব: চাঁদের ব্যাস প্রায় ৩,৪৭৫ কিলোমিটার। এটি পৃথিবী থেকে গড়ে ৩,৮৪,৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যা পৃথিবীর উপগ্রহের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে বেশ কাছে।
3. মাধ্যাকর্ষণ: চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের তুলনায় প্রায় ছয় ভাগের এক ভাগ। ফলে চাঁদে গেলে আমাদের ওজন অনেকটা কমে যায়।
4. আলো প্রতিফলন: চাঁদ নিজে থেকে আলো উৎপন্ন করতে পারে না। এটি সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে আমাদের কাছে আলোকিত হিসেবে ধরা পড়ে।
5. চাঁদের আবর্তন ও পরিভ্রমণ: চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে প্রায় ২৭.৩ দিন সময় নেয়। এটি একই সময়ে নিজ অক্ষে একবার ঘুরে, তাই আমরা সবসময় চাঁদের একই পৃষ্ঠ দেখতে পাই।
6. বায়ুমণ্ডলের অভাব: চাঁদের নিজস্ব কোনো ঘনত্বপূর্ণ বায়ুমণ্ডল নেই। এর ফলে চাঁদে আবহাওয়া পরিবর্তন বা বায়ুমণ্ডলীয় প্রতিরোধকরণ কোনোটাই হয় না এবং চাঁদের পৃষ্ঠে টেম্পারেচার খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। দিনের বেলায় তাপমাত্রা ১২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে এবং রাতের বেলায় -১৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে।
7. জোয়ার-ভাটা: চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর সমুদ্রগুলিতে জোয়ার এবং ভাটার সৃষ্টি করে। এটি পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যকার মাধ্যাকর্ষণ সম্পর্কের ফলে হয়।
8. চাঁদের বিবর্ণতা: চাঁদের পৃষ্ঠ অনেকটা ধূসর বর্ণের, যা সূর্যের আলো প্রতিফলিত করলেও আমাদের কাছে কিছুটা ম্লান ও বিবর্ণ দেখায়।
9. মানব অভিযান: ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মিশনের মাধ্যমে নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন প্রথম চাঁদে পা রাখেন, যা ছিল মহাকাশ অভিযানে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।
10. ভবিষ্যৎ অভিযান ও গবেষণা: ভবিষ্যতে মানুষ আবার চাঁদে পা রাখার পরিকল্পনা করছে, এবং চাঁদকে ব্যবহার করে মঙ্গল গ্রহে অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন গবেষণা চলছে।
চাঁদ পৃথিবীর নিকটতম মহাকাশীয় বস্তু হওয়ায় এর গুরুত্ব মানব ইতিহাসে ও মহাকাশ গবেষণায় বিশাল।