Education in Adolescence
B.ed, D.el.ed, CTET, STET VVI
DIPENDU MONDAL
কিশোরাবস্থায় শিক্ষা (Education in Adolescence) বলতে বোঝায় এমন একটি শিক্ষাপদ্ধতি যা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, আবেগীয় ও নৈতিক বিকাশকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। এই সময়টি শিশুকাল ও প্রাপ্তবয়স্কতার মধ্যবর্তী সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, যেখানে শিক্ষার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
নিম্নে কিশোরাবস্থার শিক্ষার বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো:
১. শারীরিক বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা
কিশোরাবস্থায় শরীরে দ্রুত পরিবর্তন ঘটে—উচ্চতা বৃদ্ধি, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন, হরমোনের কার্যকলাপ বৃদ্ধি ইত্যাদি। শিক্ষা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি, পুষ্টি, যৌনস্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।
২. মানসিক বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা
এই সময়ে চিন্তাশক্তি গভীর ও যুক্তিনির্ভর হয়ে ওঠে। শিক্ষার মাধ্যমে বিশ্লেষণ ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে ওঠে।
৩. আবেগীয় বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা
কিশোরদের আবেগ খুব সংবেদনশীল হয়। শিক্ষা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ, আত্মসম্মান গঠন এবং ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
৪. সামাজিক বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা
স্কুল পরিবেশ কিশোরদের সমাজে মিশতে শেখায়। দলগত কাজ, নেতৃত্ব বিকাশ, সহনশীলতা, সহযোগিতা ও দায়িত্ববোধ শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে ওঠে।
৫. নৈতিক ও চরিত্র গঠনে শিক্ষার ভূমিকা
শিক্ষা ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, দায়িত্ব ও নৈতিকতার ধারণা দেয়, যা চরিত্র গঠনে সাহায্য করে।
৬. আত্মপরিচয় গঠনে সহায়তা
কিশোররা নিজের পরিচয় খোঁজে। শিক্ষা তাদের দক্ষতা ও আগ্রহ চিনতে এবং আত্মবিশ্বাসী ও লক্ষ্যনির্ধারণে সাহায্য করে।
৭. জীবিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় সহায়তা
কারিগরি শিক্ষা, জীবনদক্ষতা এবং ক্যারিয়ার গাইডেন্সের মাধ্যমে কিশোরদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করে।
৮. প্রযুক্তি ও ডিজিটাল শিক্ষার ভূমিকা
আধুনিক শিক্ষা কিশোরদের তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার শেখায় এবং ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।
উপসংহার
কিশোরাবস্থায় শিক্ষা শুধু বইয়ের জ্ঞান নয়, বরং একজন মানুষকে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে পরিপূর্ণ করে তোলার একটি প্রক্রিয়া। এটি ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি স্থাপন করে।
